মুরগি না ডিম কোনটি প্রথমে এসেছে ?

মানুষ পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান জীব, আমাদের মস্তিষ্কের গঠন ও বিশেষ একটি স্বভাব পৃথিবীর বাকি জীব এমনকি আমাদের সঙ্গে সাদৃশ্য যুক্ত আমাদের বন্ধু শিম্পাঞ্জি থেকেও আমাদের অনেক আলাদা ও আধুনিক বানিয়েছে, যে হলো Questioning অর্থাৎ প্রশ্নকরন । বর্তমানে আমাদের বিজ্ঞান প্রযুক্তি সম্পন্ন এই আধুনিক জীবনযাত্রা সম্ভবপর হয়েছে একমাত্র আমাদের মস্তিষ্কের একটি সাধারণ স্বভাব Curiosity অর্থাৎ কৌতুহল এর জন্য , অতীত থেকেই আমাদের চারিপাশে পরিবেশে যা কিছু ঘটেছে আমরা সর্বদাই সেগুলির উপর কোশ্চেন মার্ক লাগিয়েছি যে কেন এমনটা ঘটেছে ? বা কিভাবে এটা হল ? তো তেমনই একটি ঐতিহাসিক প্রশ্ন রয়েছে যা আপনাকে কেউ না কেউ কখনো আলো কখনো করেছে যা হলো মুরগি প্রথম এসেছে না ডিম ?
আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো প্রশ্নটির উত্তর জানেন আবার অনেকেই জানেন না দুই ক্ষেত্রেই ভিডিওটি আপনারা শেষ অব্দি অবশ্যই দেখুন কেননা এর উত্তর এমন কিছু বেরোতে চলেছে যা আপনাদের সকলেরই ধারণার বাইরে ।

তো আমাদের মাঝে আমরা দুধরনের লোক দেখতে পাই, এক যারা অনেক কৌতুহলী হয় প্রত্যেকটি জিনিসের উত্তর জানতে চায় আর কিছু লোক রয়েছে যারা এসব এ মাথা ঘামায়না, চারিপাশে পরিবেশে যা হচ্ছে হতে দেয় ,আপনারা যেহেতু এই পোস্টটি পড়ছেন তো আপনারা এর প্রথম পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত সঙ্গে আপনারা অনেক বুদ্ধিমান ও ।



তো প্রথমে ডিম এসেছে না মুরগি? সেখেত্রে আমাদের প্রশ্নটিই একটু সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে কেননা এটা তো আমরা সকলেই জানি যে ডিম পাড়ার প্রাণীরা হাজার হাজার বছর আগেই পৃথিবীতে বসবাস করেছে যখন কোন মুরগির অস্তিত্বই ছিল না সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিকই ডিম প্রথম এসেছে তো সেক্ষেত্রে আমাদের আসলে প্রশ্নটি হবে প্রথমে মুরগি এসেছে না মুরগির ডিম ?
এটা তো আমরা সকলেই জানি যে একটি মুরগি কেবলমাত্র মুরগির ডিম তৈরি হতে পারে সে ক্ষেত্রে তাও যদি আপনারা বলেন যে না মুরগি প্রথম এসেছে আবার একই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে চলে আসে ওই মুরগিটা তো কোনো না কোনো মুরগির ডিম থেকেই বেরিয়েছে তাহলে আবার সেই ডিম টি কথা থেকে এলো ? কেননা মুরগির ডিম তৈরিতে মূল ভূমিকা প্রদান করে OV 17 নামক প্রোটিন যা কেবলমাত্র মুরগির ডিম্বাশয়ের ভেতরই পাওয়া যায় , সেই হিসেবে প্রথমে মুরগি এসেছে , আর এভাবেই তর্ক করতে করতে সারা দিন কেটে যাবে সঙ্গে রাত ও বরং এই তর্ক করতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম কেটে যাবে যা এতদিনে আমরা কাটিয়েও ফেলেছি তাও এটি শেষ হবেনা , কিন্তু আর না আমরা আজই এর একটি যথা যথ ব্যাখ্যা দেবো ।
তো আগে মুরগি না ডিম সেটা ব্যাখ্যা করতে প্রথমে আপনাদের ,আমাদের পৃথিবীতে বিবর্তন প্রক্রিয়া টি ভালো ভাবে বুঝতে হবে ।
আমাদের পৃথিবীতে জীবনের উৎপত্তির প্রায় দেড় বিলিয়ন বছর পর অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় 2 বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে প্রথম এককোষী থেকে বহুকোষী জীবের আবির্ভাব ঘটে ও তারও প্রায় দেড় বিলিয়ন বছর পর অর্থাৎ আজ থেকে 500 থেকে 600 মিলিয়ন বছর আগে স্পঞ্জ, জেলিফিশ ইত্যাদির উৎপত্তি হয় যাদের আমরা একটি প্রকৃত প্রাণী বলতে পারি ।
তারপর বিবর্তনের দরুন ধীরে ধীরে আরও কমপ্লেক্স বডি যুক্ত প্রাণীর উৎপত্তি শুরু হয় , Evolution ঠিক এভাবে ঘটেছিল যে যার দরুন ঐসকল জীব ই বেঁচে থাকত যারা প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে Survive করতে সক্ষম হতো , এক্ষেত্রে যারা survive করতে অক্ষম হয়েছে তারা পৃথিবী থেকে চিরও তরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে ।

Chicken or Egg who come 1st – OdhiGYAN



তো বিবর্তন সম্ভব হয় DNA মিউটেশনের দৌলতে Reproduction অর্থাৎ প্রজনন প্রক্রিয়া সময়ে দুটি জীব তাদের জেনেটিক ইনফর্মেশন কে মিলিতভাবে পরবর্তী জেনারেশনের চালিত করে যা সঞ্চিত থাকে ডিএনএ এর আকারে , রেপ্লিকেশন প্রক্রিয়ার একটি DNA তাদের আরেকটি যমজ তৈরি করে ঠিক জেরক্স এর মতন আর সেই জেরক্স কপি টি অর্থাৎ রেপ্লিকেটেড ডি এন এ টি ইনফরমেশন বহন করে নিয়ে যায় পরবর্তী প্রজন্মে , আর সেই DNA Replication এর দৌলতেই একটি মানুষ একটি মানুষকেই জন্ম দিয়ে থাকে , কিন্তু এই ডিএনএ রেপ্লিকেশন কখনোই 100% Accuracy তে হয়না , সে কারণেই নতুন প্রজন্মের খুব সুক্ষ সুক্ষ পরিবর্তন ঘটে থাকে যা একেবারে নাই সমান বলা যেতে পারে । জেনারেশন থেকে জেনারেশন ডিএনএর এই পরিবর্তন গুলিকে বলা হয় মিউটেশন , কিন্তু এই ছোট ছোট না এর বরাবর ডি এন এ মিউটেশন গুলি যখন লক্ষ লক্ষ বছরের অন্তরালে হাজার হাজার Generation ধরে ঘটতে থাকে তখন সেটি ওই পুরনো প্রজাতির জীব টি থেকে এক নতুন প্রজাতির জীব রূপান্তরিত হয়ে যায় ।
যেমন অতীতে যখন মানুষেরা একটু কম ভয়ঙ্কর নেকরে দের তাদের সাথে রাখা শুরু করল তখন ধীরে ধীরে তাদের স্বভাব পরিবর্তন হতে থাকে ও নেকরে দের DNA পরিবর্তন হতে হতে এত বছর পর বর্তমানে সেগুলি নতুন প্রজাতি অর্থাৎ কুকুরে পরিবর্তন হয়েগেছে ।
তো আবার আমাদের প্রশ্নে ফিরে আসা যাক যে প্রথমে মুরগি এসেছে না মুরগির ডিম ? এক্ষেত্রে আমরা যদি আজকের মুরগির কথা বলি সেগুলি অজানা কোন প্রজাতির কোটি-কোটি ডিএনএ মিউটেশন এর পর এমন এক স্টেজে এসে পৌঁছে ছিল যাকে আমরা Proto Chicken na আদি মুরগি বলতে পারি এই Proto Chicken একটি Pure Chicken এর 97% – 99% বৈশিষ্ট্যযুক্ত ও সাদৃশ্য যুক্ত মানা যায় । এবারে যদি দুটি প্রোটো চিকেনের একত্রে প্রজনন ঘটে তখন একটি প্রোটো চিকেন অর্থাৎ আদি মুরগির ডিম পাড়ে সেক্ষেত্রে তখন স্বল্পমাত্রায় DNA মিউটেশনের দরুন ওই ডিমটি থেকে যে নতুন প্রজাতির মুরগি বেরোয় সেটাই হলো Pure Chicken অর্থাৎ আজকের মুরগি , যা সেই 99% থেকে 100% পূরণ করে ।
তো এভাবেই আমরা বলতে পারি যে প্রথমে মুরগি এসেছে ।

আপনাদের যদি এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে অবশ্যই জানান । এছাড়াও বাকিদের এই পোস্ট টি সেয়ার করুন কেননা অনেকেই এর উত্তর জানেন । পোস্টটি শেষপর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।